সূরা আল ফাতিহা With বাংলা Translation | Recited By ওমার হিশাম আল আরাবি | Tilawa

2020-05-09 12

সূরা আল ফাতিহা With বাংলা Translation | Recited By ওমার হিশাম আল আরাবি | Tilawa

►তিলাওয়াত: ওমর হিশাম আল আরাবী
►বাংলা আনুবাদঃ আল-বায়ান ফাউন্ডেশন
►পবিত্র কুরআন শরীফের সর্বপ্রথম সূরা
►সূরাটির আয়াত সংখ্যা: ৭


সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা:


এ সূরার প্রথম ও তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ্‌র গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে আর-রাহমান ও আর-রাহীম উল্লিখিত হয়েছে। রহম শব্দের অর্থ হচ্ছে দয়া, অনুগ্রহ। এই 'রহম' ধাতু হতেই 'রহমান' ও 'রহীম' শব্দদ্বয় নির্গত হয়েছে। 'রহমান' শব্দটি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারও জন্য ব্যবহার করা জায়েয নেই। অন্যদিকে 'রহীম' সৃষ্টজগতের কারও কারও গুণ হতে পারে। তবে আল্লাহ্‌র গুণ হলে সেটা যে অর্থে হবে অন্য কারও গুণ হলে সেটা একই অর্থে হবে না।

সূরাটির দ্বিতীয় আয়াতে আল-হামদু কথাটি আশ-শুক্-র্ থেকে অনেক ব্যাপক, যা আধিক্য ও পরিপূর্ণতা বুঝায়। 'আশ-শুক্-র্ লিল্লাহ' বলার অর্থ হতো এই যে, আমি আল্লাহ্‌র যে নিয়ামত পেয়েছি, সেজন্য আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করছি। অপরদিকে 'আল-হামদুলিল্লাহ' এর সম্পর্ক শুধু নিয়ামত প্রাপ্তির সাথে নয়।[১] মানুষ যখন আল্লাহ্‌ ছাড়া অপর কারো গুণ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে তার প্রশংসা করতে শুরু করে, তখন মানুষ তার ভক্তি-শ্রদ্ধার জালে বন্দী হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত সে মানুষের দাসত্ব ও মানুষের পূজা করতে আরম্ভ করে। এই অবস্থা মানুষকে শিরকের পথে পরিচালিত করতে পারে। সে জন্য যাবতীয় 'হামদ' একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্যই করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।


সৃষ্টিজগতকে আলাম এবং বহুবচনে আলামীন বলা হয়। সূরা আশ-শু'আরার ২৩-২৪ আয়াতদুটিতে বলা হয়েছে,

"ফিরআউন বলল: রাব্বুল আলামীন কি? মূসা বললেন: যিনি আকাশসমূহ-ভূপৃষ্ঠ এবং এ দু'টির মধ্যবর্তী সমস্ত জিনিসের রব।"

রব হচ্ছেন যিনি সৃষ্টি করা, প্রতিটি জিনিসের পরিমাণ নির্ধারণ করা, পথ প্রদর্শন ও আইন বিধান দেওয়া, লালন-পালন করা, রিযিক্‌ দান করা, জীবনদান করা, মৃত্যু প্রদান করা, সন্তান দেয়া, আরোগ্য প্রদান করা ইত্যাদি সবকিছু করার ক্ষমতা রাখেন।[১] চতুর্থ আয়াতে আল্লাহ্‌কে 'বিচার দিনের মালিক' বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিচার দিন সম্পর্কে সূরা আল-ইনফিতারের ১৭-১৯ নং আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে,

"আর কিসে আপনাকে জানাবে প্রতিদান দিবস কী? তারপর বলি, কিসে আপনাকে জানাবে প্রতিদান দিবস কী? সেদিন কোনো মানুষ অন্য মানুষের জন্য কোনো কিছুর ক্ষমতা রাখবে না। আর সেদিন সকল বিষয় হবে আল্লাহর কর্তৃত্বে।"

পঞ্চম আয়াতে আল্লাহ ছাড়া অন্যসব উপাস্যের ইবাদাত করা ও সেগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়াকে অস্বীকার করা হয়েছে। ইবাদত হল ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খার সাথে সেইসব কথা বা কাজ সম্পাদন করা, যা আল্লাহ পছন্দ করেন ও যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। যেসব কথা ও কাজে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন তা থেকে বিরত থাকাও ইবাদাত। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা অথবা কারো কাছে অলৌকিক সাহায্য কামনা করা শির্ক হিসেবে গণ্য হয়।

সূরাটির ষষ্ঠ আয়াতে হিদায়াত চাওয়া হয়েছে। স্নেহ ও করুণা এবং কল্যাণ কামনাসহ কাউকে মঙ্গলময় পথ দেখিয়ে দেয়া ও মনজিলে পৌঁছিয়ে দেয়াকে আরবী পরিভাষায় হিদায়াত বলে। 'হিদায়াত' শব্দটির দুইটি অর্থ। একটি পথ প্রদর্শন করা, আর দ্বিতীয়টি লক্ষ্য স্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। সিরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে রাস্তা বা পথ। আর মুস্তাকীম হচ্ছে, সরল সোজা।[১]

সূরাটির শেষ আয়াত এর পূর্বের আয়াতের 'সরলপথ'-এর ব্যাখ্যা।

সূরা আল-ফাতিহার প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহ্‌র প্রশংসার বর্ণনা করা হয়েছে এবং প্রশংসার সাথে সাথে ঈমানের মৌলিক নীতি ও আল্লাহ্‌র একত্ববাদের বর্ণনাও সূক্ষভাবে দেয়া হয়েছে।